সিনিয়র রিপোর্টার / দ্যা লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর মিডিয়া :
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্ষ থেকে ১৫০টির মতো নথি উদ্ধার করা হয়েছে। নথিগুলো সংস্থাটির পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের বিভিন্ন প্লটের। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজউকের সদস্য (এস্টেট) মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে নথিগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী প্লটের এই নথিগুলো সংস্থাটির ‘রেকর্ড রুমে’ থাকার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে না রেখে নথিগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে রাখা হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্লটের নথি নিয়ে রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের জালিয়াতি ও প্লটমালিকদের হয়রানি করার অভিযোগ আছে। সময়মতো প্লটের নথি খুঁজে না পাওয়াকে কারণ দেখিয়ে প্লটমালিকদের কাছে অনৈতিক উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও আছে। এ ছাড়া মূল নথি আটকে রেখে জাল নথি তৈরির অভিযোগও আছে রাজউকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এমন অবস্থায় প্লটের নথি যথাস্থানে থাকলে ও প্রয়োজনমতো সেগুলো খুঁজে পাওয়া গেলে প্লটমালিকদের হয়রানি কমবে বলে মনে করেন প্লটমালিকেরা।
নথি নিয়ে হয়রানির শিকার একজন প্লটমালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি তিনি তাঁর নামে বরাদ্দ পাওয়া একটি প্লটের লিজ দলিল করার কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁকে হয়রানি করা হয়েছে। ঘুষ দেওয়ার পর নথিটি খুঁজে পাওয়া যায় বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে কাকে কত টাকা দিতে হয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর রাজউকের সে সময়ের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত আরেক অভিযানে সংস্থাটির অ্যানেক্স ভবনের একটি কক্ষ থেকে ৭০টি প্লটের নথি উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে এ ঘটনায় রাজউকের ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়েছিল।
ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, নিয়মানুযায়ী নথির গতিবিধি খাতায় নিবন্ধন না করে এবং কাজ শেষে রেকর্ড রুমে না পাঠিয়ে কৌশলে নথিগুলো সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মকর্তার সিল অবৈধভাবে তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে বেআইনিভবে ভুয়া নথি তৈরি ও লিজ দলিল সম্পাদন করে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছিল।
গড়তকালের অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, রাজউকের অ্যানেক্স ভবনে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। এ সময় রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে ১৫০টির মতো প্লটের (পূর্বাচল প্রকল্পের) নথি উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পূর্বাচলের সব কটি প্লটের নথি রেকর্ড রুমে রেখে আসতে বলা হয়েছে। তিন কার্যদিবস পর আবার এ–সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা হবে।